মঙ্গলবার | ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৈনিক পাবলিক বাংলা বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র
বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র

বাংলা চলচ্চিত্রের নায়করাজ রাজ্জাক

মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল :

বাংলা চলচ্চিত্রের নায়করাজ রাজ্জাক

মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, বিশেষ প্রতিনিধি : বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক ১৯৪২ সালের(২৩ জানুয়ারি), কলকাতার টালিগঞ্জের নাকতলার ৮ নম্বর বাড়িতে জন্মগ্রহন করেন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক রথীন্দ্রনাথ ব্যানার্জি খেলার মাঠ থেকে ডেকে মঞ্চনাটকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন। তবে প্রথমে রাজি হননি। পরে শিক্ষকের কথায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি নাটকে অভিনয় করেন। সেই থেকে শুরু।

এরপর রাজ্জাক বিদ্যালয়ের বাইরে মঞ্চনাটকে অভিনয় করতে আরম্ভ করেন। একবার তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে বোম্বে গিয়ে একটি ফিল্ম ইনস্টিটিউটে ছয় মাস থাকেন। সেখান থেকে ফেরার পর নায়ক হওয়ার চিন্তা তাকে পেয়ে বসে। কলকাতায় অনেক চেষ্টা করে তিনি কোনোমতেই সুযোগ পাচ্ছিলেন না নিজের প্রতিভা প্রমাণ করতে। সবাই তাকে আশা দিলেও কাজে না নেওয়ায় ভেঙে পড়েন। কিছু চলচ্চিত্রে এক্সট্রা শিল্পীর কাজ করলেও তার মন ভরেনি। এ অবস্থায় পীযূষ সাহা নামের একজন তাকে বাংলাদেশে চলে আসার পরামর্শ দেন। তার পরামর্শ অনুযায়ী বাংলাদেশে চলে আসেন। তখন আবার ভারতবর্ষে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা চলছিল। মুসলিমরা অনেকে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে বাংলাদেশে চলে আসতে লাগল। রাজ্জাকের বাংলাদেশে আসার পেছনে এটাই বড় কারণ।

এদিকে যখন রাজ্জাক সফলতার সঙ্গে অভিনয় করছেন, তখন হঠাৎ করে এক দুর্ঘটনায় পা হারান সেসময়ের আরেক জনপ্রিয় নায়ক রহমান। চলচ্চিত্রশিল্প তখন রাজ্জাকের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বলতে গেলে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত তিনি একাই টেনে গেছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রকে।

চলচ্চিত্রে অভিনয় করতে গিয়ে মিষ্টি মেয়েখ্যাত নায়িকা কবরীর সঙ্গে তার জুটি গড়ে ওঠে, যা দর্শক ভালোভাবেই গ্রহণ করেন। এই জুটির অধিকাংশ ছবি ছিল ব্যবসাসফল। কবরী ছাড়াও রাজ্জাক শবনম, শাবানা, ববিতাসহ অনেকের বিপরীতে অভিনয় করেন।

নিজের অভিনয়গুণে রাজ্জাক ‘নায়করাজ’ উপাধিতে ভূষিত হয়েছিলেন। আহমদ জামান চৌধুরী তাকে এই উপাধি দিয়েছিলেন। রাজ্জাক সর্বমোট পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। সিনেমাগুলো হলো— ‘কী যে করি’ (১৯৭৬), ‘অশিক্ষিত’ (১৯৭৮), ‘বড় ভাল লোক ছিল’ (১৯৮২), ‘চন্দ্রনাথ’ (১৯৮৪) ও ‘যোগাযোগ’ (১৯৮৮) । এ ছাড়া তিনি ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আজীবন সম্মাননা পান।

রাজ্জাক প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন। তার প্রথম প্রযোজিত ও পরিচালিত ছবিটির নাম ‘অনন্ত প্রেম’। তারপর ‘মৌ চোর’, ‘বদনাম’, ‘অভিযান’, ‘সৎ ভাই’, ‘চাপা ডাঙ্গার বউ’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘বাবা কেন চাকর’ ইত্যাদি ছবি নির্মাণ করেন৷।

বাংলা-উর্দু মিলিয়ে প্রায় চার শ’র মতো চলচ্চিত্রে অভিনয় করা বহু গুণে গুণান্বিত এই নায়ক ২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে পাড়ি জমান না-ফেরার দেশে। তার এভাবে চলে যাওয়ায় থমকে পুরো চলচ্চিত্রশিল্প। সেই সঙ্গে বেদনার নীল আস্তরণ জমা পড়েছে অসংখ্য ভক্তের মনে। প্রিয় নায়ককে আর কখনও দেখা যাবে না নীল আকাশের নিচে হাঁটতে। তবে যতদিন বাংলাদেশের বাংলা চলচ্চিত্র থাকবে, ততদিন বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে তারার মতো দেদীপ্যমান থাকবেন কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক।

আপনার মতামত দিন

Posted ৭:৫৯ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২০ মে ২০২৩

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
ড. সৈয়দ রনো   উপদেষ্টা সম্পাদক   
শাহ্ বোরহান মেহেদী, সম্পাদক ও প্রকাশক
গোলাম রব্বানী   নির্বাহী সম্পাদক   
,
ঢাক অফিস :

২২, ইন্দারা রোড (তৃতীয় তলা), ফার্মগেট, তেজগাও, ঢাকা-১২১৫।

নরসিংদী অফিস : পাইকসা মেহেদী ভিলা, ঘোড়াশাল, নরসিংদী। ফোনঃ +8801865610720

ই-মেইল: news@doinikpublicbangla.com