পিবি ডেক্স : বর্তমানে নাইজেরিয়ায় উৎসবের চেয়ে সংকটই বড় হয়ে উঠেছে। দেশটির হাজার হাজার মুসল্লি এবার ঈদুল আজহায় পশু কোরবানি দিতে পারেননি। কারণ, লাগামহীন মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে যাওয়াই এর পেছনে দায়ী বলে মত দিয়েছেন স্থানীয়রা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানায়।
দেশটির ৭৮ বছর বয়সী মাললাম কবিরু টুডুন ওদা নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বিবিসিকে জানান, প্রতিবছরই কোরবানির ঈদে আমি পশু কোরবানি দিয়ে থাকি। ১৯৭৬ সাল থেকে এই ধর্মীয় অনুশাসন পালন করে আসছি। কিন্তু এবারই প্রথম কোরবানি দিতে পারলাম না। নাইজেরিয়ায় আমার মতো আরও হাজার হাজার মুসলিমের একই অবস্থা।
গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে নাইজেরিয়া। দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ৩০ শতাংশ, যা গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া খাবারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ। তাই বেশির ভাগ নাইজেরিয়ানের কাছে এখন একমাত্র অগ্রাধিকার মৌলিক খাবার জোগাড় করে কোনোমতে বেঁচে থাকা।
৫৪ বছর বয়সী শামসু মোহাম্মদ বলেন, ‘কেউ যদি আমাকে এখন কোরবানির উদ্দেশ্যে পশু কেনার জন্য টাকা দেয়, সেই টাকা দিয়ে সবার আগে আমি কিছু খাবার কিনে মজুত করব। এটাই এখন বেশি দরকার।’
পশু কোরবানি দেওয়া বাধ্যতামূলক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলাম ধর্মে বলা আছে, যারা সামর্থবান, এই ইবাদত তাদের জন্য। সবার জন্য এই বিধান বাধ্যতামূলক নয়।
উল্লেখ্য ঈদের আগে নাইজেরিয়ায় একটি ভেড়া ১ লাখ নায়রা বা ৬৩ ডলারে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এত বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে অনেকেই কোরবানির পশু কিনতে পারেননি এবার।
মাললাম আউয়াল ইয়াসাই নামের ৬৩ বছর বয়সী এক নাইজেরিয়ান বলেন, আগেই বুঝতে পেরেছিলাম যে এ বছর একা একা কোরবানি দেওয়া সম্ভব হবে না। তাই একজন ভাগিদার খুঁজছিলাম। শেষ পর্যন্ত দু্ইজন মিলে একটি উট কিনতে পেরেছি।