মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলঃ দেশীয় শোবিজ মিডিয়ার তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় মডেল – অভিনেত্রী মানসী প্রকৃতি এবার একটি চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করলেন। বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ঔপন্যাসিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত কালজয়ী উপন্যাস ‘পদ্মা নদীর মাঝি’র কপিলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন এই গ্ল্যামার গার্ল। ইতিপূর্বে পদ্মা নদীর মাঝি উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে চলচ্চিত্র ও নাটক। জেলেদের জীবনের সুখ – দুঃখের নিখুঁত রূপায়ণ ‘পদ্মা নদীর মাঝি’। এই উপন্যাসের কুবের ও কপিলা চরিত্র দুটি এখনো মানুষের হৃদয়ে গেঁথে আছে।
সেই উপন্যাস অবলম্বনে একই নামে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছিলেন কলকাতার বিশিষ্ট নির্মাতা গৌতম ঘোষ। ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ এবং ভারতের যৌথপ্রযোজনায় এটি নির্মিত হয়। এতে অভিনয় করেন রাইসুল ইসলাম আসাদ, চম্পা, রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, উৎপল দত্ত প্রমূখ। এতে কপিলা চরিত্রে অসাধারণ অভিনয় করে কলকাতার রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ব্যাপক প্রশংসিত হন।
‘পদ্মা নদীর মাঝি’ উপন্যাসের অনুপ্রেরণায় তরুণ নির্মাতা তারিক মুহাম্মদ হাসান নির্মাণ করছেন টেলিছবি ‘কুবের মাঝি’। এতে কপিলা চরিত্রে অভিনয় করছেন সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মানসী প্রকৃতি। সম্প্রতি ভোলার বিভিন্ন মনোরম লোকেশনে টেলিছবিটির প্রথম ধাপের তিন দিনের চিত্রায়ণ সম্পন্ন হয়েছে। অচিরেই দ্বিতীয় ধাপের চিত্রায়ণ শুরু হবে। আসছে ঈদে টেলিছবিটি বৈশাখী টিভিতে প্রচার হবে বলে জানিয়েছেন এর নির্মাতা।
কপিলা চরিত্র নিয়ে প্রসঙ্গে প্রকৃতি বলেন, উপন্যাসটি আমার খুব পছন্দের। এই উপন্যাস পড়ার পর গল্পের প্রতি একটা টান ছিল। যখন জানতে পারি আমি কপিলা চরিত্রে অভিনয় করছি, তখন আরও এক্সাইটেড ছিলাম। চরিত্রটি খুবই চ্যালেঞ্জিং। ভয় ছিল কাজটি ঠিক মতো করতে পারবো কিনা। রূপা দি’র কাজটি বেশ মনোযোগ দিয়ে দেখেছি। সবকিছু মিলিয়ে বেশ প্রস্তুতি নিয়ে কাজটি করতে হয়েছে। নিজের সেরাটা দিয়ে চরিত্রটি ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, আমি সাঁতার জানি না, তারপরও বড় একটি নদীতে নামতে হয়েছিল। দুই ঘণ্টারও বেশি সময় পানিতে ভিজে একটি দৃশ্যের চিত্রায়ণ করতে হয়েছে। এতে আমার জ্বর ও ঠান্ডা লেগে যায়। তবুও কাজে বিন্দু পরিমাণ ছাড় দেইনি। সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে একটা দৃশ্যে এক পর্যায়ে নৌকা থেকে পানিতে লাফ দিতে হবে। দৃশ্যটি ছিল ডুবে যাওয়ার। আমি নৌকা থেকে লাফ দিয়ে ডুবে যাচ্ছি তা দেখে এক জেলে ছুটে আসে আমাকে বাঁচাতে। তিনি ভেবেছিলেন সত্যি সত্যি আমি ডুবে যাচ্ছি। কাজটি করতে গিয়ে এরকম অনেক অভিজ্ঞতা হয়েছে। প্রচণ্ড গরম – রোদ উপেক্ষা করে কাজটি ভালো ভাবে ফুটিয়ে তোলার জন্য আমরা সবাই পরিশ্রম করেছি। নির্মাতা সিনেম্যাটিক ভাবে এটি নির্মাণ করছেন। এটি যদি সিনেমা হলেও মুক্তি দেওয়া হয় দর্শক ইতিবাচক ভাবে গ্রহণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। আশা করছি, ‘কুবের মাঝি’ সবাই পছন্দ করবে। আমি কপিলা চরিত্রটি নিয়ে বেশ আশাবাদী।
‘কুবের মাঝি’ যেন পদ্মা পাড়ের জেলে জীবনের সুখ – দুঃখের নিঁখুত রূপায়ন। টেলিছবিটিতে মাঝি চরিত্রে অভিনয় করছেন চিত্রনায়ক শিপন মিত্র, মালা চরিত্রে চিত্রনায়িকা আঁচল, ললিতা চরিত্রে সঞ্জিতা দত্ত। এছাড়াও আছেন টুটুল চৌধুরী, কাকা মাসুদসহ আরও অনেকে।