কোরবান আলী তালুকদার, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধিঃ সরকারের ঘোষণা ছাড়াই মহান মে দিবসকে কেন্দ্র করে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে বিভিন্ন সড়কে নতুন করে ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আজহারুল ইসলাম আজহার। সরকার বা জেলা শ্রমিক ফেডারেশনের সিদ্ধান্ত ছাড়া এই ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা করায় যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
ভাড়া বৃদ্ধির ফলে একদিকে যেমন স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও অভিভাববকরা বিপাকে পড়েছেন, অন্যদিকে যাত্রীদের সাথে সিএনজি-অটো রিকশা শ্রমিকদের সাথে তর্কবিতর্কে জড়াচ্ছেন যাত্রীরা। এছাড়া নানা অজুহাতে শ্রমিক ইউনিয়ন নেতারা নিজেদের ইচ্ছে মতো ভাড়া বৃদ্ধি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ নানা মহলে সমালোচনার ঝড় তুলেছে বিষয়টি।
জানা যায়, গত সোমবার (০১ মে) মহান মে দিবসে টাঙ্গাইল জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য, সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের উপজেলা শাখার সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নতুন করে দেড়গুণ ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেন। এসময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার জাহিদ হোসেনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতার ঘোষণা মতে- ভূঞাপুর থেকে গোবিন্দাসী টি রোড, স্কুল রোড ও বটতলা আগের ভাড়া ছিল ১০ টাকা থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি করে ১৫ টাকা, ভূঞাপুর থেকে মাটিকাটা ১৫ টাকা থেকে ৫ টাকা বৃদ্ধি করে ২০ টাকা, ভূঞাপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব পাথাইলকান্দি বাজার ও রেলস্টেশন পর্যন্ত ৩০ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি করে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া ভূঞাপুর থেকে এলেঙ্গার ভাড়া ৩০ টাকা থেকে ১০ টাকা বৃদ্ধি করে ৪০ টাকা, ভূঞাপুর থেকে নলিন ও ফলদার ভাড়া ২৫-৩০ টাকা থেকে ২০ টাকা বৃদ্ধি করে ৩৫-৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, পাথাইলকান্দি বাজার থেকে ভূঞাপুরের ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। গতকাল সিএনজিতে ওঠতেই সিএনজি চালক জানালেন ৪০ টাকা। এরআগে ২৫ টাকার ভাড়া করে ৩০ টাকা করা হয়েছিল। এভাবে ভাড়া বৃদ্ধি কোনো ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে বলেন- নেতারা ভাড়া বৃদ্ধি করেছে।
সিএনজি চালকরা জানান, সব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। নতুন করে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি না হলেও সিএনজির যাবতীয় যন্ত্রাংশের দাম বাড়ছে কয়েকগুণ। যার কারণে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়া হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা সিএনজি-অটো রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য আজহারুল ইসলাম জানান, গ্যাসসহ দেশে সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দেড় বছর আগে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছিল। সেই আগের ভাড়ায় তাদের পোনায় না। এজন্য ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ বেলাল হোসেন জানান, সরকার নতুন করে সড়ক পরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির কোনো ঘোষণা বা প্রজ্ঞাপন দেয়নি। স্থানীয় সিএনজি-অটোরিকশা শ্রমিক সংগঠন থেকে ভাড়া বৃদ্ধির যে ঘোষণাটি দিয়েছে তা অন্যায় ও অনিয়মতান্ত্রিক। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।