মঙ্গলবার | ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২রা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৈনিক পাবলিক বাংলা বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র
বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র

বিষাক্ত বিদ্যা

চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস:

বিষাক্ত বিদ্যা

চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস: মানুষকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারে শিক্ষা।কিন্তু কোন শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড! শুধু পুথিগত শিক্ষার মাধ্যমে স্বার্থপর, ভোগবাদী, লুটেরা এবং সার্টিফিকেট-সর্বস্ব গ্র্যাজুয়েট ও উচ্চশিক্ষাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হতে পারে না।মানব জীবন নিয়ে মেরুদন্ড সোজা করে দাঁড়াতে হলে তাকে সঠিক শিক্ষা-দীক্ষায় উন্নত হতে হবে। সত্যিকার বা সঠিক শিক্ষা না-পেলে বিষাক্ত শিক্ষা অর্জন করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ‘অশিক্ষিত’ হয়ে পড়বে। জাতি কোনো দিনই মাথা সোজা করে দাঁড়াতে পারবে না।এই বাক্য আমরা সব সময় শুনি।আমাদের শিক্ষক এবং আমাদের গুরুজনরা এ কথা বলে শিক্ষার গুরুত্ব আমাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম এসব শুনে শুনেই বড় হয়েছি।আমার কথা আসলে শিক্ষা বলতে আমরা কী বুঝি?শুধুই বিদ্যালয় কেন্দ্রিক রুটিন মাফিক পাঠদানকেই কি আমরা শিক্ষা বলবো? নাকি, সত্যিকার জীবনমুখী শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের মতো মানুষ হওয়াকে শিক্ষা বলব? আবার কোনটা সঠিক শিক্ষা বা কোনটা সঠিক শিক্ষা নয়, সেটার মানদন্ড কে নির্ধারণ করবে? এটাই আমার প্রশ্ন শিক্ষা আর জাতির মেরুদন্ড সম্পর্কিত।আমি চিত্রশিল্পী মিলন বিশ্বাস এই ছবিটি এঁকেছি অনেক চিন্তা ভাবনা করে।আসলে একটি বিষাক্ত সাপ কে দুর থেকে চিনা যায় কিন্তু একজন সঠিক বিদ্বান ব্যাক্তিকে চেনা যায় না।কারন সুন্দর পোশাক পরিধান করলেই বিদ্বান ব্যাক্তি হওয়া যায় না। আমি মনে করি শিল্পীর আঁকা শুধু একটা ছবি সুন্দর হলেই হবেনা।ছবি মানেই একটি ভাষা হওয়া উচিৎ তাই ছবির কিছু অংশ লেখালেখির মধ্যে তুলে ধরে নিজেকে সবসময়

গান,কবিতার মধ্যে নিয়োজিত রাখি। বর্তমানে যা ঘটেছে এবং ভবিষতে কি ঘটতে পারে সব সময় তাই নিয়েই চিন্তিত। তাই লেখার চেষ্টা করেছি মনের কথা। আমার বয়স বেশি না তবু ছোটবেলা আমরা যে শিক্ষা পেয়ে বড় হয়েছি এখন শিক্ষার্থীরা আসলে সব সময় শুধু পড়ে।শিক্ষার্থী নামের যারা বিদ্যালয়ে পড়ে তারা কোনো না কোনো বর্গের পরীক্ষার্থী।’তাই সবাই পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত।কে কতটুকু শিক্ষাগ্রহণ করেছে, তার চেয়ে সবাই বেশি ব্যতিব্যস্ত পরীক্ষা নিয়ে এবং পরীক্ষায় কে কতটা ‘জিপিএ’ পেল তা নিয়ে! পরীক্ষার্থীরা ব্যস্ত! শিক্ষকরাও ব্যস্ত! পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বেশি ব্যস্ত।সবাই ছোটাছুটি করছে জিপিএ ৫ এর পেছনে ছুটছে।আসলে শিক্ষা বলতে আমরা যা বুঝি, এই শিক্ষার্থীরা কোন পুঁজি নিয়ে জাতির মেরুদন্ড হয়ে উঠবে, এবং জাতির মেরুদন্ড বিকাশে শক্ত অবদান রাখবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয়ের অবকাশ আছে। যে শিক্ষা শিক্ষার্থীদের মানসিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশকে বিস্তারিত করে না , সমাজ-দেশ-রাষ্ট্র সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করে না, ইতিহাস-ঐতিহ্য-সংস্কৃতি নিয়ে একটা সাংস্কৃতিক মনস্তত্ত্ব তৈরি করে না, এবং একটা সত্যিকার দেশপ্রেমিক প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলে না, তাকে কি আমরা শিক্ষা বলতে পারি? আমাদের দেশে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে নানান ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন সরকার পরীক্ষার সময় নকল বন্ধ করা,প্রশ্নপত্র ফাঁস করা,কোচিং সেন্টার বন্ধ করা, বাজারে পাওয়া গাইড বইয়ের দৌরাত্ম্য থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে আনা এবং শিক্ষার্থীরা যাতে কিছু নির্বাচিত প্রশ্ননির্ভর পরীক্ষা না-দিয়ে গোটা বইটা মনোযোগ দিয়ে পড়ে,যথাযথ পাঠোদ্ধার করতে পারে, তার জন্য নানান চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন করে শিক্ষাব্যবস্থাকে পরিচালনা করেন বিশেষ করে পাঠদান পদ্ধতি ও শিক্ষার্থীদের জ্ঞান মূল্যায়ন পদ্ধতির পরিবর্তনের জন্য সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের মাধ্যমে পরীক্ষা গ্রহণের একটি ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছে। এই পদ্ধতির মধ্যে একটা অভিনবত্ব এবং নতুনত্বের ছাপ ছিল। এতে কোনো সন্দেহ নেই শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নই সবার প্রধান লক্ষ্য।
আমি বলবো বর্তমানে বিশেষ করে, সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাঠদান ও মূল্যায়নের প্রক্রিয়া সর্বত্রই প্রশংসিত বলে মনে করি। কিন্তু সৃজনশীলতা একটি স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া! শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের মাধ্যমে কাউকে সৃজনশীল করা যায় কি না তা নিয়ে চিন্তা করার প্রয়োজন আছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, গাইড ব্যবসায়ী, কোচিং সেন্টার ব্যবসায়ী এবং শিক্ষা ব্যবসায়ীরা সৃজনশীল প্রশ্নপত্রকেও অত্যন্ত সৃজনশীলতা দিয়ে একটা প্যাটার্ন তৈরি করে নতুনভাবে তাদের ব্যবসা খুলে বসে। ফলে, সৃজনশীল প্রশ্নপত্রের পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীকে সৃজনশীল করার সব আয়োজন কিছু ব্যবসায়ীদের
জন্য সব পরিকল্পনা ব্যর্থ বলে মনে করি।
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার আসল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য একজন শিক্ষার্থীকে সৃজনশীল, মননশীল এবং অনুভূতিশীল করে গড়ে তোলা।তাই বলবো যারা এই শিক্ষার অবনতি করছেন তাদের মেধাকে আমি দেশের বা সমাজের জন্য বিষাক্ত বিদ্যা বলবো। আমি চিত্রশিল্পী আমার চিন্তা করেই ছবি আঁকতে হয় আর ছোট থেকে সবাই যা করে তা আমি করিনা ভিন্ন চিন্তা নিয়ে এই ছবিটি আঁকা।আমি ছাত্র জীবনে পেন্সিলের ইতিহাস জানার চেষ্টা করে পেয়েছিমাম যা তার একটু লিখছি ‘সায়েন্টিফিক আমেরিকান’ ম্যাগাজিনে পুনর্মুদ্রিত একটি প্রবন্ধে পেন্সিলের ইতিহাস অনুসন্ধান করতে গিয়ে, দেখি ১৫৬৪ সালে ইংল্যান্ডের কম্বারল্যান্ডে গ্রাফাইট আবিষ্কারের সঙ্গে বিষাক্ত পেন্সিলের ইতিহাস ১৮৭০ থেকে ১৯০০ সালের মধ্যে ঈগল পেন্সিল কোম্পানির লেড পেন্সিলে বিষাক্ত পদার্থ পেয়েছিলেন যদি লেড পেন্সিল ভুলক্রমে মুখে দিয়ে দিলে বা শরীরের সংস্পর্শে আসলে লেড পয়জনিং বা বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমনটাও জেনেছি ইতিহাসে।এবার আরো অবাক হবেন বিষাক্ত মানুষের কথা জানলে ভারতবর্ষের ইতিহাসে সবচেয়ে ‘বিষাক্ত’ রাজা, মশা তাঁকে কামড়ালেই মরে যেত! মাহমুদ শাহ মাহমুদ বেগাদা নামে পরিচিত ছিলেন। তাঁর পুরো নাম ছিল ‘আবুল ফাতহ নাসির-উদ্দিন মাহমুদ শাহ প্রথম। মাহমুদ বেগাদা ছিলেন গুজরাটের ষষ্ঠ সুলতান। খুব অল্প বয়সেই তাঁকে সিংহাসনে বসানো হয়। তিনি ২৫শে মে ১৪৯৮সাল থেকে ২৩শে নভেম্বর ১৫১১সাল পর্যন্ত গুজরাট শাসন করেছিলেন।
তিনি গুজরাটের সুলতানদের মধ্যে সবচেয়ে বিশিষ্ট ছিলেন। তিনি যখন সিংহাসনে বসেন তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর,

তিনি ৫২ বছর বয়স পর্যন্ত রাজত্ব করেন। কথিত আছে এই সুলতান আশেপাশের লোকদের আতঙ্কে রাখার জন্য এবং তাঁর শত্রুদের মনে ভয় সঞ্চার করতে ওই রকম একটি বহিরঙ্গ তৈরি করেছিলেন। তাঁর বিশেষ জীবনযাপন এবং পোশাকের কারণে তাঁকে দেখতেও ভয়ঙ্কর মনে হত। কথিত আছে যে তাঁর দরবারের পার্ষদরাও একই রকম পোশাক পরিধান করতেন, যাতে তাঁদের সবাইকে বিপজ্জনক দেখায়। আজ থাক এই প্রসঙ্গ ।আমি ২০০৩ সাল থেকে খুলনাতে একটি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি যার নাম খুলনা আর্ট একাডেমি হাজার হাজার শিক্ষার্থী আসছে আমার কাছে ছবি আঁকার জন্য। তাদের কাছ থেকে দেখেছি ১০০জনের মধ্যে ৫জন ছাড়া কেউ কিছু জানেনা চিন্তা টা আরো বেড়ে যায়।তারপর ২০১০থেকে শুরু করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য চারুকলা ভর্তি কোচিং সেই থেকে যা দেখে আসছি জিপিএ ফাইভ পেয়েছে অথচ নিজের ঠিকানা নিজে লিখতে পারেনা।এমন প্রমান অনেক আছে তাই লেখার সাহস পেয়েছি ।এখন ২১৬শিক্ষার্থী বাংলাদেশ ও ভারতের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে ও সরকারি চাকরি করছে অসংখ্য শিক্ষার্থী।তাই অনেক কিছুই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।হয়তো আমার লেখা পড়ে কেউ বলবেন আমি বড় চিন্তা বিদ হয়ে গেছি ।তাদের উদ্দেশ্যে বলবো আসলে আপনারা বিশ্ব কবি লেখকদের জীবনী পড়বেন তবেই বুঝতে পারবেন আমি কি বলতে চেয়েছি।থাক ও কথা কে কি ভাবলো এটা তার ব্যাপার। এবার আমাদের সন্মানিত অভিভাবকদের মধ্যে ছেলেমেয়েদের ভালো জিপিএ নিয়ে ভালো ফল করানোর যে প্রবণতা এবং দৌড়ঝাঁপ সেটাও শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার্থী বানানোর পেছনে অন্যতম একটা কারণ বলে আমি মনে করি।
আর অভিভাবকের এসব অস্থিরতা এবং প্রতিযোগিতার মানসিকতাকে পুঁজি করে শিক্ষা ব্যবসায়ীরা নিজেদের রমরমা ব্যবসা খুলে বসেছেন। ফলে, শিক্ষার্থীদের বিদ্যমান এবং সত্যিকার শিক্ষার্থী বানানোর অন্তহীন রাষ্ট্রীয় প্রচেষ্টা উদ্দিষ্ট ফল আনতে অনেক ক্ষেত্রে ব্যর্থ হচ্ছে এটা আমার চিন্তা।
দেশ-বিদেশের নানান জ্ঞানভান্ডার থেকে প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত জ্ঞান আহরণের পাশাপাশি যদি কোনো জাতির সত্যিকার শক্ত,মজবুত ও টেকসই মেরুদন্ড তৈরি করতে হয়, তাহলে প্রয়োজন গণমুখী শিক্ষা, জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষা, এবং সত্যিকার মানুষ গড়ার শিক্ষা।পিতা মাতার সহোযোগীতার জন্য সন্তানরা বড় হয় শিক্ষা অর্জন করে সেই শিক্ষার্থী রাষ্ট্রের ও সমাজের মানুষের প্রতি যদি একজন শিক্ষার্থীর দৃঢ় কমিটমেন্ট না-থাকে বা যে শিক্ষা সে কমিটমেন্ট তৈরি করতে ব্যর্থ হয়, সে শিক্ষা কোনো দিন কোনো জাতির মেরুদন্ড হতে পারে না। শিক্ষিত হয়ে যদি দেশের ভালো কাজে নিয়োজিত না থেকে ক্ষমতা পেয়ে দূর্নীতি শুরু করেন সেই বিদ্যা বা শিক্ষাকে আমি বিষাক্ত শিক্ষা বলি।যার মধ্যে শিক্ষা নেই সে সমাজের থেকে অনেক পিছিয়ে থাকে।প্রত্যেকটা পরিবারের পিতা-মাতা তার সন্তানকে শিক্ষিত করার জন্য স্কুল কলেজে পড়ালেখা করিয়ে পিতা-মাতা সন্তানকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। ভবিষ্যতে শিক্ষা দীক্ষায় বহিঃপ্রকাশ ঘটবে এমন চিন্তা ভাবনা করে দেশের বাইরে ও পড়ালেখা করান ও স্কলার্শিপ নিয়ে পিএইচডি করার জন্য ছুটে যায় গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট কিংবা ডক্টরেট সম্পন্ন করে ফিরে আসে নিজ জন্মভূমিতে।শিক্ষা ক্যাটাগরি অনুযায়ী দেশের বড় কোন স্থানে তার সর্বোচ্চ সম্মান দিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়,দায়িত্ব পেয়ে এসি রুমে আরামে বসে সব সততা ও
প্রতিশ্রুতি ভুলে যায়। এটাই হলো বিষাক্ত শিক্ষা। আমি মুলত একজন চিত্রশিল্পী তাই লেখার মাঝে যদি ভুল থেকে থাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আর আপনার পরিবারের সকল নবীন শিক্ষার্থীদের মঙ্গল কামনা করি।আমি পরিশেষে বলব, সত্যিকার শিক্ষা নিঃসন্দেহে একজন মানুষকে সত্যিকার মানুষ হিসেবে তৈরি করে।

আপনার মতামত দিন

Posted ৩:৪৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ২৯ মে ২০২৩

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
ড. সৈয়দ রনো   উপদেষ্টা সম্পাদক   
শাহ্ বোরহান মেহেদী, সম্পাদক ও প্রকাশক
গোলাম রব্বানী   নির্বাহী সম্পাদক   
,
ঢাক অফিস :

২২, ইন্দারা রোড (তৃতীয় তলা), ফার্মগেট, তেজগাও, ঢাকা-১২১৫।

নরসিংদী অফিস : পাইকসা মেহেদী ভিলা, ঘোড়াশাল, নরসিংদী। ফোনঃ +8801865610720

ই-মেইল: news@doinikpublicbangla.com