হাজি জাহিদ, নরসিংদী থেকে :
হাজী জাহিদ, নরসিংদী : নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার চরআড়ালিয়া ইউনিয়নে কৃষকের জমিজোর পূর্বকভাবে মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে দিয়েছে ভূমিদস্যুরা প্রতিবাদ করায় পরিবার পরিজন নিয়ে গ্রাম ছাড়া ভুক্তভোগী পরিবার।
স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ, মামলার বর্ণনামতে কৃষি জমির মাটি এতটাই গভীর করে কেটে নিয়ে যায় যে কেউ দেখলে পুকুর না বলে উপায় থাকবেনা। তাদের মতে জমি ভেকু দিয়ে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে কেটে নিচ্ছে মাটি সন্ত্রাসীরা। ফলে পাশের জমির মাটি স্বভাবতই ওই গর্তে পড়ে যায় এবং তা বিনা টাকায় ও বিনা অনুমতিতে নিয়ে যায় তারা। ফলে বিরাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জমির মালিকপক্ষ
ফসলি জমি রক্ষায় স্থানীয় ভুক্তভোগী কৃষক লকেস মিয়া বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (রায়পুরা) নরসিংদী মামলা নং ৩১০/২০১৮ ভূমিদস্যু ছায়েদ মিয়া পিতা মিতা আব্দুল হক বটতলী পুরান পাড়া ভূমি দস্যুদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরবর্তীতে সহকারী ভূমি কর্মকর্তার কার্যালয় রায়পুরা, বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, কৃষক লকেস মিয়া সন্ত্রাসীদের কাছে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করতে অস্বীকার করলে তারা জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে যায়।
বাধা দিতে গেলে ভূমিদস্যু ১/সাইদ পিতা আব্দুল হক ২/মূল ভূমিদস্য কাজল মিয়া পিতা আয়নাল ৪/রফিক সাবেক মেম্বার পিতা সামেদ ডাকনাম ছামু ৫/জুয়েল পিতা বজলুর রহমান ৬/শুকুর আলী পিতা আনসার আলী এদের পিছে আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা রয়েছেন বলেও জানা যায়।
মাটি কাটতে নিষেধ করায় লকেশ মিয়ার উপরে উল্লেখিত ভূমিদস্যু মাটি খেকু সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে এবং তাকে বাড়ি ঘর ছাড়া করেন তাদের ভয়ে নিজ গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। মামলা ও রায়পুরা ভূমি সহকারী কর্মকর্তার কার্যালয় অভিযোগ করার কারণে এই ভূমিদস্যুরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে যেকোনো সময় মেরে ফেলতে পারে বলে জানান লকেস মিয়া।
এ বিষয়ে রায়পুরা উপজেলা সহকারী ভূমি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান আমরা বিষয়টি অভিযোগ পেয়েছি আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি জমিটি দুপক্ষ দাবি করছে তাদের। দুপক্ষকেই আমরা অতি শীগ্রই অফিসে ডাকবো এবং তাদের নিয়ে বসে উভয় পক্ষের কাগজ দেখে জটিলতা নিরসন করার চেষ্টা করব।
ভূমিদস্যুরা মাটি কাটার বিষয়ে বর্তমান চরআড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসান আমাদের প্রতিনিধিকে জানান বিষয়টি আমি শুনেছি ভুক্তভোগী লকেস মিয়া আমার কাছে এসেছিল জমিনে লোক পাঠিয়ে খবর নিয়েছি এবং ঘটনা সত্যতা পেয়েছি এ বিষয়ে আদালতে একটি মামলাও রয়েছে।ঘটনার সাথে জড়িত লোকজন সাবেক এক প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের লোক বলে এলাকাবাসী জানায়।
বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান এর মুটোফোনে ফোন করে লকেস মিয়ার জমি জোরপূর্বক বিয়ানীভাবে দখল করে মাটিকাটার বিষয়টি তিনি জানান। আমি বা আমার কেউ জড়িত নয় মাটি কাটার ঘটনা সত্য, তবে দাগ নাম্বার ভুল হওয়ায় লকেশ মিয়া এ জমি দাবি করছেন। জমির মালিক ছায়েদ মিয়া নামের এক ব্যক্তিও দাবি করছেন তাই এজটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে চরআলিয়া ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) জামান মিয়া জানান মাটি কাটার বিষয় সত্য আমরা কয়েকবার প্রশাসন নিয়ে এসিলেন মহোদয়ের নির্দেশে বাধা দিয়েছি আমাদেরকে দেখে তারা নৌকা নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে।২৬/০১/২০২৩ তারিখ বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের আগেই ভূমিদস্যুরা ৩৫২৭ আর এস দাগের ৪১ শতাংশ নাল ফসলি জমি কেটে পুকুরে পরিণত করেছে।
লকেস মিয়া তার পরিবারের লোকজন মানবতার জীবন যাপন করছে সন্ত্রাসী ভূমিদস্যুদের ভয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না, প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন অতি শীগ্রই যাতে লকেসসহ পরিবারের সকলকে বাড়িতে ফিরতে সহযোগিতা করা হয় ও অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয় এবং তার জমি তাকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
Posted ৮:৪০ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩