শনিবার | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দৈনিক পাবলিক বাংলা বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র
বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র

নড়াইলে করোনা রোগীদের দেখতে ভিড়

নড়াইলে করোনা রোগীদের দেখতে ভিড়

উজ্জ্বল রায় (জেলা প্রতিনিধি) নড়াইল থেকে  : চল্লিশোর্ধ একজন পুরুষ রোগী বিছানায় বসা। বিছানায় তার বামপাশে বসা দুই নারী। সঙ্গে লাগোয়া পাশের বিছানায় রোগীর মুখোমুখি বসা তিন নারী। আরও তিনজন দাঁড়ানো। এক রোগীকে ঘিরে আছেন আটজন স্বজন।
পাশের বিছানায় আরেক রোগীর ডান ও বামপাশে দুই নারী বসা। পরের বিছানায় শ্বাসকষ্টের রোগীকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তাকে মাথা টিপে দিচ্ছেন স্ত্রী। পায়ের কাছে বিছানায় বসা এক পুরুষ, দাঁড়িয়ে আছেন আরেক স্বজন।

নড়াইল সদর হাসপাতালের মূল ভবনের নিচতলায় ৪০ শয্যার করোনা ইউনিটে দেখা গেছে স্বজনদের এমন ভিড়। গত বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেখানের রোগী, স্বজন, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিনিধির। ওয়ার্ডের প্রায় প্রত্যেক রোগীর শয্যার পাশে ছিলেন একাধিক মানুষ। কেউ বসা, কেউ দাঁড়ানো। কেউ রোগী দেখতে এসেছেন, আবার কেউ রোগীর সঙ্গে থাকেন। ওয়ার্ডের বারান্দায়ও মানুষের ভিড়। তারা সবাই করোনা রোগীদের স্বজন। অন্য দুটি করোনা ইউনিটে গিয়েও একই চিত্র দেখা গেছে। এদিকে তিনটি করোনা ইউনিটেই নারী ও পুরুষ রোগী পাশাপাশি বিছানায় থাকছেন।

করোনা ইউনিটে ৫৭ বছর বয়সী একজন রোগীকে সেবা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলে। ওই ছেলে জানালেন, সকালে তিনি বাড়ি থেকে এসেছেন। তিনি এবং তার মা পালা করে দিনে ও রাতে এ রোগীর কাছে থাকেন এবং বাড়িতে যান। তারা গণ-পরিবহনে যাতায়াত করেন। ওষুধ ও খাবার কিনতে বা অন্য প্রয়োজনে তারা বাজারে যাচ্ছেন নড়াইল শহরের বাসিন্দা আরেক করোনা রোগীর স্বামী বলছিলেন, ‘আমি একাই স্ত্রীর সঙ্গে থেকে সেবা করছি। বাইরে চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছি। ওষুধ ও খাবার আনতে বাইরে যাচ্ছি। বাসায়ও যাচ্ছি।’

এভাবে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অবাধে ঢুকছেন ও বাইরে যাচ্ছেন স্বজনেরা। এখানে সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেই। নেই করোনা রোগীদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টাইনের (সঙ্গনিরোধ) উদ্যোগ। এতে হাসপাতাল থেকেই করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। হচ্ছে সামাজিক সংক্রমণ।

হাসপাতালে করোনা রোগীদের জন্য রয়েছে ৬০ শয্যার তিনটি করোনা ইউনিট। আছে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন ব্যবস্থা। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ বিশেষায়িত চিকিৎসকেরা সেখানে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তাই এ হাসপাতালে জেলায় শনাক্ত ও উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের ভিড় বাড়ছে। হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মী ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে একই ইউনিটে নারী ও পুরুষ রোগী থাকায় নারী রোগী ও তার স্বজনেরা জানালেন নানা অস্বস্তি ও বিব্রতকর পরিস্থিতির কথা।কয়েকজন রোগীর স্বজন ও স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টরা বলছিলেন, এই তিনটি ইউনিটেই নারী ও পুরুষ রোগীদের জন্য পৃথক ইউনিট করা যেত। করোনা ইউনিটে অবাধে প্রবেশ বন্ধ করা খুবই সহজ। রোগীর সঙ্গে একজন থাকবেন, তিনি বাইরে বের হতে পারবেন না। অন্য স্বজনেরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা ইউনিটের সামনে এসে রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধ, খাবার বা অন্য জিনিসপত্র রেখে যাবেন। এটি হাসপাতালের কর্মকর্তাদের একটু সদিচ্ছা ও উদ্যোগের ব্যাপার মাত্র।

এসব বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এ এফ এম মশিউর রহমান বলেন, ‘সমস্যা আছে, চেষ্টা করা হচ্ছে সর্বোচ্চ। অবাধে ঢোকা বন্ধ করবে কে ? দুজন আনসার সদস্য ডিউটি করছেন। কিছু কিছু রোগী আছেন একা চলতে পারেন না। তাদের সঙ্গে একজন থাকতে হয়। তাদের বাইরে যাওয়ার কথা না।’

নারী ও পুরুষের পৃথক ইউনিটের বিষয়ে মশিউর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে জায়গার স্বল্পতা। নতুন ভবন না হওয়া পর্যন্ত এমন সমস্যা থাকবে।’

আপনার মতামত দিন

Posted ৮:৩১ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৩ জুলাই ২০২১

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

ড. সৈয়দ রনো   উপদেষ্টা সম্পাদক   
শাহ্ বোরহান মেহেদী, সম্পাদক ও প্রকাশক
গোলাম রব্বানী   নির্বাহী সম্পাদক   
,
ঢাক অফিস :

২২, ইন্দারা রোড (তৃতীয় তলা), ফার্মগেট, তেজগাও, ঢাকা-১২১৫।

নরসিংদী অফিস : পাইকসা মেহেদী ভিলা, ঘোড়াশাল, নরসিংদী। ফোনঃ +8801865610720

ই-মেইল: news@doinikpublicbangla.com