মুন্নি আক্তার, স্টাফ রিপোর্টার :
মুন্নি আক্তার, স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়ার নন্দীগ্রামে হঠাৎ করেই সর্দি-জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। স্থানীয় ফার্মেসীগুলোতে শিশু ও বৃদ্ধ রোগীদের ভিড় দেখা গেলেও প্রয়োজন সংখ্যায় মেলেনি প্যারাসিটামল।
অনেক রোগীকে প্রয়োজনের ১০টি ট্যাবলেটের স্থলে বিভিন্ন কোম্পানির ২টি করে ট্যাবলেট দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন রোগীরা। এনিয়ে বিভিন্ন মহলে হৈচৈ শুরু হলে উপজেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টস এসোসিয়েশন দাবি করেছে, শুধুমাত্র কেক্সিমকোর প্যারাসিটামল পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অন্য কোম্পানির প্যারাসিটামল আছে।
গত ২৪ জুন থেকে চারদিন নন্দীগ্রাম পৌর সদরের ফার্মেসীগুলোতে প্যারাসিটামল সংকট দেখিয়ে সিন্ডিকেট সৃষ্টির মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করে দোকানিরা।
এছাড়া নন্দীগ্রাম পৌর শহরের জাকওয়ান ফার্মেসীতে চিকিৎসক ছাড়াই সর্দি-জ্বরের রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছেন দোকানি এবং ম্যানেজার। সেখানে মাঝেমধ্যে একজন চিকিৎসক বসেন। চিকিৎসক না থাকলেও দেওয়া হচ্ছে হাতুরে চিকিৎসা। অনুমোদনহীন স্থানীয় ক্লিনিকগুলোতে এবং ফার্মেসীতে ভুল চিকিৎসায় মাঝেমধ্যেই নারী-শিশুসহ রোগী মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে হাসপাতালে যেতে চান না গ্রামের মানুষ। জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় আগ্রহী নন তারা। উপজেলার প্রায় সবকটি গ্রামে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগী বেড়েছে বলেও জানা গেছে। ঘরেই চলছে সাধারণ চিকিৎসা। কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে বা স্থানীয় ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। ফলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফার্মেসীতে প্যারাসিটামল কিনতে আসা আরিফুল ইসলাম, আব্দুল মান্নান ও আমিনুল ইসলাম বলেন, টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ভিজে শিশু বাচ্চারা সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে। কিন্তু ফার্মেসীতে গিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় প্যারাসিটামল পাননি তারা। গত চারদিন ফার্মেসীতে প্যারাসিটামল নেই জানিয়ে ১০টির স্থলে দুটি করে ট্যাবলেট দিয়েছে। তবে চারদিন পর এখন ফার্মেসীগুলো প্যারাসিটামল বিক্রি করছে। দোকানিরা প্যারাসিটামল সংকট দেখিয়ে সিন্ডিকেট সৃষ্টির মাধ্যমে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করেছে বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয়রা।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাম পৌর সদরের ফার্মেসী দোকানিরা কথা বলতে চান না। তবে প্রশ্নের মুখে উপজেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিস্টস এসোসিয়েশন সভাপতি ও জাকওয়ান ফার্মেসীর ব্যবসায়ী ইউনুস আলী দাবি করেন, ফার্মেসীতে প্যারাসিটামল সংকট নেই। শুধুমাত্র কেক্সিমকোর প্যারাসিটামল পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদামতো ওষুধ সরবরাহ করতে পারবেন তারা।
এদিকে সচেতনতা না থাকায় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে অসুস্থ অবস্থায় অনেকে হাটবাজারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। গত এক সপ্তাহে উপজেলায় করোনা শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতে মানুষের অনীহা থাকায় উপজেলায় করোনা রোগীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ণয় করতে পারছে না উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। উপজেলায় এ পর্যন্ত ৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। জ্বর, ঠান্ডা ও গলাব্যথাসহ বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে গত এক সপ্তাহে বহির্বিভাগে দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পর বেশির ভাগ রোগীই মারাত্মক দুর্বল হয়ে পড়ছেন।
এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন মন্ডল বলেন, জ্বর-সর্দি কিছুটা বেড়েছে। অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসছেন। তাদের বারবার করোনা নমুনা পরীক্ষা করতে বলা হচ্ছে।
Posted ৭:২৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৯ জুন ২০২১