নরসিংদী থেকে সংবাদ কর্মী হাজী জাহিদ::-
পিতার স্বীকৃতি চায় হত ভাগা মামুন দীর্ঘ ২২ বছর মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ছেলের স্বীকৃতি আদায় করতে পারেননি মামুন। সে পিতার স্বীকৃতি চায়।না পাবার যন্ত্রনার ফলে সে এখন মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছে, মন চায় অচেনা কোন জায়গায় চলে যেতে অথবা আত্মহত্যা করতে। এমনটি জানালেন মো. মামুন মিয়া (২২)। জন্ম নিবন্ধন সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ১৯৯৭র ৯ মার্চ। তার পিতার নাম মোঃ আবুল হোসেন, বাড়ি শিবপুর উপজেলার যোশর ইউনিয়নের নৌকাঘাটা গ্রামে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এক সময় স্থানীয় দেবালেরটেক গ্রামের এক মেয়ের সাথে ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে নৌকাঘাটা গ্রামের মৃত বরকত আলীর ছেলে আবুল হোসেনের। পরে একসময় তাদের মধ্যে দৈহিক মেলামেশা হয়। এক পর্যায়ে ওই মেয়ের পেটে সন্তান জন্ম নেয়। বিয়ের প্রলোভনে ওই মেয়ের সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে আবুল হোসেন। শুধু তাই নয় সম্পর্কের পাশাপাশি এই মেয়ের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন ওই আবুল হোসেন। সন্তান গর্ভে আসার পর ওই মেয়ে আবুল হোসেনকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আবুল হোসেন বিয়ে না করে তাকে মারধোর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন। পরে সে অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
সহজ সরল ওই মেয়েটি সন্তান জন্মের অপেক্ষায় থাকেন। একসময় তার কোলজুড়ে আসেন এক পুত্র সন্তান। তার নাম রাখা হয় মোঃ মামুন মিয়া। পরে সন্তান কোলে নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে থাকেন স্বীকৃতি আদায়ের জন্য। তৎকালীন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. ফাসাদ মিয়ার কাছেও গিয়েছিলেন, কিন্তু চেয়ারম্যান কোনো ফয়সালা করতে পারেননি। এরপর একাধিকবার সালিশ দরবার করেন স্থানীয় বাসিন্দা ইজ্জত আলী, গিয়াস উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন শাহজাহান এবং মানিক মিয়াসহ আরো অনেকে। কিন্তু কোনো সুরাহা করতে পারেনি।
ওই মহিলার ন্যাশনাল আইডি কার্ডেও স্বামীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে আবুল হোসেন, আইডি কার্ড নং ৬৮১৭৬৫২৫৪৭২৫৩। এ মহিলা মামুনের গর্ভধারীনি মা আর কোনদিন বিয়ে করেননি, এই ছেলেকে মামুনকে বুকে আঁকড়ে ধরে পড়ে আছেন তার বাবার বাড়িতে। তার বর্তমান বয়স ৫০। মামুনের একটাই আফসোস যে, কাগজেপত্রে স্বীকৃতি মিললেও সামাজিকভাবে স্বীকৃতি না পাওয়ায় আমি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে মুখ দেখাতে পারিনা, মানুষজন আমাকে নিয়ে নানা ঠাট্টা তামাশা করে। অথচ প্রকৃতপক্ষে আমার বাবা মো. আবুল হোসেন। মামুন আরো বলেন যে, আমি আমার বাবার সহায় সম্পত্তি টাকা পয়সা কিছুই চাইনা, শুধু চাই সামাজিক স্বীকৃতি। তিনি আমাকে তার ছেলে হিসেবে পিতারস্বীকৃতি দিলেই জীবনে সুখী হব, আত্মতৃপ্তি পাবে আমার গর্ভধারিনী মা।
মামুন আরো বলেন, ‘আমি এই স্বীকৃতি লাভের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দেশের সকল আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে বিনীত ভাবে অনুরোধ করছি। যদি আমি সামাজিক স্বীকৃতি না পাই তাহলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার আর কোন পথ থাকবে না।
Posted ৮:২৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১