সোমবার | ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দৈনিক পাবলিক বাংলা বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র
বিশ্বজুড়ে বাঙলার মুখপত্র

খাগড়াছড়িতে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসের শংকা

মাসুদ রানা জয়, পার্বত্যচট্টগ্রাম থেকে :

খাগড়াছড়িতে প্রবল বর্ষণে পাহাড় ধসের শংকা

বৃষ্টি ও ভারি বর্ষণে খাগড়াছড়িতে পাহাড় ধসের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। থেমে থেমে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় পাহাড় পাদদেশে বসবাসকারীদের মৃত্যুঝুঁকিতে চাপা পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের প্রাণহানির শঙ্কা রয়েছে।

সচেতনমহল মনে করছেন, পাহাড়ে জুম চাষের নামের মাটি ধ্বংস, গাছ কেটে নিয়ে যাওয়া আর প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনস্ট হওয়ার কারণে পাহাড় ধসের বড় শংকা রয়েছে। এই ব্যাপারে প্রশাসন ও সাধারণ জনগণ একাধিকবার প্রতিবাদ করে আসলেও বন ও পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট এখনও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানে ধসের ঘটনা ঘটছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ঘটতে পারে ভয়াবহ পাহাড় ধস। অথচ ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে মানুষ বসবাস করছে।
শুধু খাগড়াছড়ি পৌর শহরে পাহাড়ের পাদদেশে সাড়ে ৩ হাজারের বেশি পরিবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। ভারি বর্ষণেও তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে ইচ্ছুক নয়। প্রশাসনের সতর্কতা বার্তাও তারা পরোয়া করে না।
জানা গেছে, একটানা বৃষ্টি হলে খাগড়াছড়ি জেলার সবুজবাগ, শালবাগান, কুমিল্লা টিলা, কলাবাগান, কদমতলীসহ শহরতলীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে।
সরেজমিন সবুজবাগে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পাঁচটি পাহাড়ের আংশিক ধস হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘর ধসে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে। এখানকার বাসিন্দা আব্দুল মোতাতেব, রহুল আমিন ও সানজিদা খাতুন জানান, মাত্র বৃষ্টি শুরু হয়েছে। অথচ এর মধ্যে পাহাড়ের মাটি ধসে গেছে।
আমরা খুব আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি। বৃষ্টি হলে ভয়ে রাতে তাদের ঘুম আসে না। গত বছর এখানে পাহাড় ধস হলেও তা রোধে প্রশাসন কোনো উদ্যোগই নেয়নি। তবে জানা গেছে, পাহাড় ধস রোধে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে স্থানীয় প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়।
কিন্তু সেগুলো মূলত সাময়িক। প্রশাসন স্থায়ী ও টেকসই কোনো পরিকল্পনা নেয় না। ফলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। বরং প্রতিবছরই পাহাড় ধসে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বাড়ে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অসহায় মানুষ পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়ে তুলেছেন। কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এখানে আমরা বছরের পর বছর বসবাস করছি।
অন্য কোথাও আমাদের থাকার জায়গা নেই। এখনকার ভূসম্পত্তি ছেড়ে অন্য কোথাও আমরা যেতেও চাই না। অবৈধ বসতি স্থাপন এবং অপরিকল্পিতভাবে অবকাঠামো নির্মাণের কারণে পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটছে।
এ কারণে ভূমিদস্যুরা পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। বাণিজ্যিক কারণে নির্বিচারে গাছ কাটায় পাহাড় প্রাকৃতিকভাবে ধস প্রতিরোধের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। ফলে পাহাড় ধস ঠেকানো যাচ্ছে না।
খাগড়াছড়ি পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলনের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী জানান, পাহাড় কাটা রোধে আইনের সর্বোচ্চ প্রয়োগ না থাকায় পাহাড় কাটার প্রবণতা বাড়ছে। প্রতিবছর প্রাণহানি ঘটলেও পাহাড় ধস রোধে সরকারের কোনো টেকসই ব্যবস্থা নেই।
খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, পৌর এলাকায় চারটি স্থানে পাহাড় ধসের ঝুঁকি রয়েছে। প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বসবাসকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। ঝুঁকিতে থাকা বাসিন্দাদের পৌরসভা সার্বিক সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে পৌর আবাসন এলাকায় তাদের পুনর্বাসন করা হবে।

মাসুদ রানা জয়, পার্বত্যচট্রগ্রাম ব্যুরো:
১৪/০৬/২০২১

আপনার মতামত দিন

Posted ১:৫২ অপরাহ্ণ | সোমবার, ১৪ জুন ২০২১

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

ড. সৈয়দ রনো   উপদেষ্টা সম্পাদক   
শাহ্ বোরহান মেহেদী, সম্পাদক ও প্রকাশক
গোলাম রব্বানী   নির্বাহী সম্পাদক   
,
ঢাক অফিস :

২২, ইন্দারা রোড (তৃতীয় তলা), ফার্মগেট, তেজগাও, ঢাকা-১২১৫।

নরসিংদী অফিস : পাইকসা মেহেদী ভিলা, ঘোড়াশাল, নরসিংদী। ফোনঃ +8801865610720

ই-মেইল: news@doinikpublicbangla.com